“খাসিয়াদের মানুষ উৎসর্গের প্রথা উৎপত্তি”
চেরাপুঞ্জি পাহাড়ের বৃহৎ গর্তে এক থেলেন(অজগর) বাস করতো।এই থেলেনের প্রভাবে নাকি দেশে মড়ক দেখা দিত।মড়ক থেকে রেহাই পাবার উদ্দেশ্য একটি লোক সেই থেলেনকে একটি করে ছাগল উৎসর্গ করতো।এইভাবে লোকটির সাথে থেলেনের খুব খাতির জমে।পরবর্তীকালে লোকটি থেলেনকে ডাক দিলেই সে গোশতের লোভে হা করে চলে আসত।লোকরি মাথায় একবার দুর্বুদ্ধি জাগলো।সে থেলেনকে হত্যার অভিপ্রায়ে একটি লৌহ-শলাকা অগ্নিসংযোগে গরম করে থেলেনকে ডাক দিল। গোশতের লোভে থেলেন হা করে চলে আসতেই সে জলন্ত শলাকা তার মুখে পুরে দিল।ফলে থেলেন মারা গেল। তখন লোকটি থেলেনকে ছোট-ছোট খন্ড করে সব গোশত বিভিন্ন অঞ্চলের লোকদেরকে পাঠিয়ে দিল খাওয়ার উদ্দেশ্য। কিন্তু ভূলক্রমে এক টুকরো গোশত এক পাথরে পড়েই ছিল।যে পাথরে গোশত টুকরো পড়ে ছিল সেই পাথর ছিল যাদুগুন।ফলে সেই গোশত থেকে হাজার-হাজার থেলেন(অজগরের) জন্ম হলো।তাদের উৎপাতে সবাই অস্থির হয়ে উঠলো।এখন আর মানুষ উৎসর্গ করা ছাড়া তারা কিছুতেই নিবৃত্ত হলো না।সেই থেকে মানুষ হত্যা করে অজগর পূজার রীতি খাসিয়া সমাজে বিস্তার লাভ করে।
বি:দ্র; আশ্বিন মাসে শুক্লপক্ষে এই পূজা অনুষ্ঠিত হতো।পরবর্তীকালে সরকারে কড়া শাসনের ফলে এই প্রথা বিলুপ্ত হয়, এখন মনুষ্য বদলে জন্তুজানোয়ার উৎসর্গ করা হয়।
(অরণ্য জনপদে)