শেষ পর্ব- মানসী আজ উধাও
কয়েকদিন পর।রহিম এখন মানসীকে ছাড়া এক মুহূর্তও একা থাকতে পারেনা।তার শুধু মানসীকে দেখতে ইচ্ছে করে।রহিমে মন এখন মানসী প্রতি এত আকৃষ্ট হয়েছে যে সে শুধু মানসী দেখতে চাই আর চাই।এখন রহিম মানসীকে বারবার ফোন করতে থাকেন।মানসীর মনেও সন্দেহ জাগে।সে ভাবতে নিশ্চয় কোনো কারণ আছে।বারবার কথা বলার কারণে মানসীর মনও বদলে যায়।মানসীও আস্তে আস্তে রহিমের দিকে ঝুকে পড়ে।
এদিকে সুদীপ্ত আর মানসীকে ফোন করে করেনা।মানসীও এখন আর অতটা সুদীপ্ত ফোন করে না। এভাবে তারা দুজনে দূরে সরে যেতে থাকে।
ইদানীং মানসী আর রহিমে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়।তারা দুজন দুজনকে দেখার জন্য প্রতিদিন ক্যাম্পাসে এসে হাজির হয়।শুরু হয় আবার তাদের মাঝে নতুন করে কফি হাউস আর রেস্তোরায় যাওয়া।বার্গার, কফি আর বিবিয়ানী পার্টি এখন নিয়মিত হয়ে ওঠেছে।আড্ডা কারণে তাদের আর নিয়মিত ক্লাস করা হয়ে ওঠে না।
এদিকে নিয়মিত পার্টির কারণে মানসীর ম্যানিব্যাগের টাকাও ফুরিয়ে আসে।টাকা না থাকার কারণে মানসীর অবস্থা এখন বেহাল।
মানসীর এখন নিয়মিত বাবার কাছ থেকে টাকা চাই।নিয়মিত টাকা দেয়ার কারণে মানসীরর বাবা অস্থির হয়ে ওঠে।আজকাল মানসীর কেন এত টাকা লাগে সেই কথা মানসীর বাবা জানতে।বাবা জানতে চাওয়ায় মানসী নানা অজুহাত দেখায়।সে তার বাবাকে বলে আজকাল ভার্সিটিতে নানা সেমিনার আর প্রেজেন্টেশন চলে।এই কথা শুনার পর বৃদ্ধ বাবার আর কথা বলার সাহস থাকেনা। রহিমও সুযোগ কাজে লাগাতে শুরু করে। সে আজকাল মানসীর সব বিল দিয়ে দেয়।মানসীও রহিমে ফাঁদে পা দেয়।
আজকাল মানসী আর রহিম প্রেম ভালবাসায় হাবুডুবু খাচ্ছেন। তারা বিভিন্ন শপিংমলে মলে শপিং করতে যায়।শপিংমলে মানসীকে রহিমের সাথে তার সহপাঠীরা দেখতে পাই।আর সুদীপ্তকে জানিয়ে দেয়।সুদীপ্তও এ ব্যাপারে জানতে চাই।মানসী আর কিছু বলেনা।সে শুধু হাসে আর হাসে।এখন সুদীপ্তও মানসীকে ভুল বুঝতে থাকে।তাই মানসী রহিমে সাথে মেলামেশা করলেও সুদীপ্ত আর কিছু বলে না।
মানসী বন্ধুরা মানসী নানাভাবে বুঝাতে থাকে।সে যেন বেজাতিকে বিয়ে না করে।
কিন্তু কে শুনে কার কথা।মানসী আর পাহাড় আর পাহাড়িদের পাত্তা দেয় না।মানসী টাকার লোভে তার জন্মদাতা বাবা-মাকে প্রায় ভুলে যায়।
এদিকে অনার্সের কোর্সও শেষ হয়ে আসে।মানসী এখন থেকে বাবা-মার সাথে এমনকি পরিবারে লোকদেরর সাথেও কম কথা বলে।তার মামার সাথেও সে ভালভাবে কথা বলো না আর।সে শুধু রহিমের সাথে কথা বলতে চাই।
মানসী ভুলতে থাকে পাহাড় আর পাহাড়ের বাস করা মানুষদের।
কয়েকদিন মাস পর অনার্সে রেজাল্ট বের হয়।মানসী আর রহিম কিন্তু দুজনে ভাল মার্ক পেয়ে পাশ করে।মানসী আর রহিম দুজনে পালিয়ে বিয়ে করে।
কয়েকদিন পর মানসীর বাবা-মা মানসী বিয়ে সম্পর্কে জানতে পারে।এ কথা শুনার পর বাবা-মার মুখে শুধু চোখে জল।একদিন মানসীর বাবা-মা স্বপ্ন দেখতো মানসী ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে জনগণের সেবার করবে।সেই স্বপ্ন আজ শুধু স্বপ্নই থেকে গেল।বাবা-মার লালিত স্বপ্ন মানসী ধূলায় মিশিয়ে দিলেন।
বিয়ে কয়েক বছর হতে চলল।আস্তে আস্তে মানসী বুঝতে পারে রহিমের আসল চেহারা। রহিম এখন আর মানসীকে অতটা ভালবাসেনা।আস্তে তাদের সংসারের ভাঙ্গন লাগে।
।সে এখন মানসী কাছ থেকে বিয়ে পণ হিসেবে যৌতুক চাই।যৌতুক না পেলে রহিম দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাই।এতে মানসীর মনে আর সুখ,শান্তি থাকেন।সে ভুলে যায় সুখের দিনগুলি।কষ্ট তার দিনদিন প্রকট হতে থাকে।
এখন সে বুঝতে পারে লাভ জিহাদের আসল চোহারা।সে এখন পাহাড়ে ফিরতে চাই। কিন্তু তার পাহাড়ের ফেটা হয়ে ওঠে না।মানসী কান্নায় ব্যাকুল ওঠে।সে ভাবতে থাকে পাহাড়ের জনপদ,পাহাড়েরর লোকজনদের।সে নিজের ভুল বুঝতে।সে পাহাড়ে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে কিন্তু আসতে পারেনা
অতঃপর সে আত্মহত্যা করতে কোনো দ্বিধাবোধ করেনা।এভাবে শেষ হয়ে যায় মানসী সুন্দর জীবন আর ম্যাজিস্ট্রেট হবার স্বপ্ন।
ছবি;সংগৃহীত
(মানসী মত হয়ে বহু পাহাড়ি মেয়ের জীবন এভাবে শেষ হয়ে যায়)